সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে ফরাসি ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক

সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে শুক্রবার দামেস্কে সাক্ষাত করেছেন ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির পর ইউরোপের এ দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শারার এটাই প্রথম বৈঠক।  সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স টুয়েন্টিফোর এ খবর জানিয়েছে।

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোত এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক বলেছেন, তারা সিরিয়ার সাথে একটি নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে চান। এছাড়া আহমেদ আল-শারার সাথে দেখা করার সময় শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক উত্তরণের আহ্বান জানান।

বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বেয়ারবক বলেন, ইউরোপ সিরিয়াকে সমর্থন করবে, তবে ইসলামপন্থি কাঠামোর জন্য অর্থায়ন করবে না।

তিনি আরও বলেন, জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি নারীদেরও সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ সরকারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরপরই রাজধানীর কুখ্যাত সেদনায়া কারাগারে প্রবেশ করেন বিদ্রোহীরা।  বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে ওই দিনই সেদনায়ার কারাগারে অত্যাচারের অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।  দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই কারাগারটি এদিন ঘুরে দেখেন।

সিরিয়ার কুখ্যাত সেদনায়া কারাগারকে মানব কসাইখানা হিসেবে অভিহিত করেছিল জাতিসংঘ।  এই কারাগারে আসাদ সরকারের হাজার হাজার বিরোধীদের নির্যাতন ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

বেয়ারবক বলেন, আসাদ শাসনের অর্থ কী ছিল তা আমরা সেদনায়ায় দেখেছি। এটি শুধু সেই অমানবিক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের একটি ক্ষুদ্র ধারণা দেয়।

তিনি আরও বলেন, একটি জবাবদিহি কাঠামো সিরিয়ার জনগণকে ধীরে ধীরে তাদের গভীর ক্ষত থেকে সেরে উঠতে সাহায্য করতে পারে।

অন্যদিকে দামেস্কে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্যারোত বলেন, কুর্দিদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে হবে, যা আজ শুরু হওয়া এই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ।

সিরিয়া একটি বহুজাতিক ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের রাষ্ট্র। এখানে কুর্দি, আর্মেনিয়ান, আসিরিয়ান, খ্রিস্টান, দ্রুজ, আলাউই শিয়া এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি আরবসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী বসবাস করে।  শারার দল সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা শারার প্রতিবেশীদের আশ্বস্ত করতে চাইছেন, এটি ইসলামি জঙ্গিবাদের শিকড় থেকে দূরে সরে গেছে।

LEAVE A REPLY