নায়ক হতে পারেননি, হয়েছেন পুরোদস্তুর অভিনেতা

অ্যাড্রিয়েন ব্রডি

ঘনিয়ে আসছে অস্কারের দিনক্ষণ। বিশ্বের বুকে বিনোদন অঙ্গনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ন এ পুরষ্কার ঘিরে বরাবরই আগ্রহ থাকে তুঙ্গে। এবার অস্কারের মঞ্চে সেরা অভিনেতার দৌড়ে রয়েছে হলিউড অভিনেতা অ্যাড্রিয়েন ব্রডি। তার প্রশংসিত চলচ্চিত্র ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ দর্শক-সমালোচক হৃদয় জয় করে এবার অস্কারের মঞ্চে।

আশাবাদী ব্রডি নিজেও। এর আগে একবার অস্কার উঠেছে তার হাতে। তবে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে পরিপূর্ণ ভাবলেও নায়ক হিসেবে তিনি হলিউডে ফিট নন, এমনটাই মনে করেন ব্রডি।

গত বছর মুক্তি পেয়েছে অ্যাড্রিয়েন ব্রডি অভিনীত ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’।

সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ব্র্যাডি করবেট। এর আগে তাকে দর্শক বড় পরিসরে চিনেছিল ‘দ্য পিয়ানিস্ট’ দিয়ে। রোমান পোলানস্কির সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০০২ সালে। এ দুটো ছাড়াও বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন ব্রডি, কিন্তু তাকে কখনো ‘লিডিং ম্যান’ হিসেবে দেখেনি ইন্ডাস্ট্রি।

দ্য ব্রুটালিস্টের পর ব্রডিকে নতুন করে দেখছে সিনেমা সংশ্লিষ্টরা।

২০০৩ সালে রোমান পোলানস্কির ‘দ্য পিয়ানিস্ট’ অস্কার এনে দেয় ব্রডির ঝুলিতে। সে সময় তার বয়স মাত্র ২৯ বছর এবং তিনি সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সেরা অভিনেতার পুরস্কারটি পান। কিন্তু এর পরও প্রথম সারির অভিনেতা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রি তাকে গণ্য করেনি। এ নিয়ে ব্রডি বলেন, ‘হ্যাঁ, বিষয়টা আমি সবসময়ই জানতাম।

আমার মুখপাত্ররা জানিয়েছেন আমাকে কীভাবে দেখা হয়।’

শাহরুখ-সালমানের যে আচরণ আজও ভুলতে পারেননি মমতা

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ব্রডি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাকে প্রমাণ করতে হয়েছে সিনেমার প্রধান চরিত্র আর দশজন নায়কের মতো সুদর্শন বা নায়কোচিত নাও হতে পারে। আমারও মনে হয়েছিল ওই ঘরানার সিনেমার চেয়ে একটু ভিন্ন ধারার চিত্রনাট্যে কাজ করা আমার জন্য নিরাপদ হবে।’

সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ব্রডি তার কাজের স্বীকৃতি বহুবারই পেয়েছেন। খুব অল্প বয়সেই পেয়েছেন অস্কার। কিন্তু নায়ক হয়ে উঠতে পারেননি। তার খুব একটা আফসোস নেই এতে। ব্রডি বলেন, ‘এটা জীবনের একটা অংশ। যেহেতু আমাকে দেখতে আর দশজন নায়কের মতো নয়, কিছু চরিত্র পেতে আমার অসুবিধা হয়। কিন্তু কিছু চরিত্র আমি সহজেই পাই এবং সেটা আমার পক্ষেই যায়।

অস্কার ঘরে তুলতে পারে ‘আ কমপ্লিট আননোন’

প্রায় তিন দশকের ক্যারিয়ারে তিনি নায়িকাদের সঙ্গে রোমান্স করা নায়ক না হয়েও ব্রডি একজন পুরোদস্তুর অভিনেতা হয়ে উঠেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্রডির খুব ভালো বন্ধু অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসন। ব্রডিকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘অ্যাড্রিয়েনের চেহারা দেখেই মনে হয়, সে অন্য এক সময়ের মানুষ। ওর মুখে সবসময় অভিব্যক্তি খেলা করে। আমাদের সিনেমার দুনিয়ায় এ রকম চেহারা ক্লোজআপ শটের জন্য খুব ভালো। চোখেই যে অভিব্যক্তি থাকে, কখনো তা মূলধারার সিনেমার জন্য অতিরিক্ত মনে হলেও তা একদম নির্ভেজাল।’

ব্রডি একজন মার্কিন অভিনেতা ও প্রযোজক। তিনি রোমান পোলান্‌স্কি পরিচালিত ‘দ্য পিয়ানিস্ট’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ও সমাদৃত হন এবং মাত্র ২৯ বছর বয়সে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য অস্কার জিতে এই বিভাগে সর্বকনিষ্ঠ বিজয়ী হয়ে ওঠেন। এছাড়া তিনি একমাত্র মার্কিন অভিনেতা যিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে সেজার পুরস্কার লাভ করেছেন।

২০০৫ সালে আলোড়ন তোলা সিনেমা ‘কিং কং’ ব্রডিকে এনে দেয় তুমুল জনপ্রিয়তা। ব্রডি অভিনীত অন্যান্য সফল চলচ্চিত্রগুলো হল দ্য থিন রেড লাইন (১৯৯৮), দ্য ভিলেজ (২০০৪), কিং কং (২০০৫) এবং প্রিডেটরস (২০১০)। তিনি পরিচালক ওয়েস অ্যান্ডারসনের পরিচালনায় একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে দ্য দার্জিলিং লিমিটেড (২০০৭), ফ্যানট্যাস্টিক মিস্টার ফক্স (২০০৯) এবং দ্য গ্র্যান্ড বুদাপেস্ট হোটেল (২০১৪)। ২০১৭ সালে তিনি বিবিসির ঐতিহাসিক নাট্যধর্মী পিকি ব্লিন্ডারস ধারাবাহিকের চতুর্থ মৌসুমে অভিনয় করেন।

LEAVE A REPLY