নাহিদ রানা।
পাশাপাশি তিনটি উইকেট। এর একটিতে ঘাস একদম ছেঁটে ফেলা হয়েছে। আগামীকাল এই উইকেটেই হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ। ঠিক পাশের উইকেটেই আবার অনেক ঘাস রাখার কারণ বোধগম্য।
পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ যে এখানেই হওয়ার কথা। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ওপর চড়াও হতে নিজেদের পেসারদের জন্য ঘাসের সজ্জা রেখে দিয়েছে স্বাগতিকরা। তবে তৃতীয় উইকেটটি দূর থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। সেটি চট দিয়ে ঢেকে রাখা।অদেখা সেই উইকেট নিয়ে অবশ্য ধারণা পাওয়া গেল এমন একজনের কাছ থেকে, এর চরিত্র যাঁর সবচেয়ে ভালো জানা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চিফ কিউরেটর টনি হেমিং আজকের বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের উইকেট নিয়ে ছোট্ট করে বলছিলেন, ‘ব্যাটিং স্বর্গই হওয়া উচিত।’ অবশ্য রাওয়ালপিন্ডির উইকেট নিয়ে ধারণা কম নেই বাংলাদেশ দলেরও। গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দুই টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে যাওয়া নাজমুল হোসেনরা শেষ ম্যাচে দেখেছিলেন তরুণ এক ফাস্ট বোলারের উত্থানও।
ব্যাটিং উইকেটেও গতি দিয়ে স্বাগতিক দলের ব্যাটারদের কাঁপিয়ে ছেড়েছিলেন নাহিদ রানা। গত বছর মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষিক্ত পেসার রাওয়ালপিন্ডিতে খেলেছিলেন দুটি ম্যাচই। এর মধ্যে শেষ ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন একাই। ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় টেস্টে পর পর তিন ওভারে তুলে নেন শান মাসুদ, বাবর আজম ও সৌদ শাকিলকে। ৩ উইকেটে ৬২ থেকে হুট করে ৮১ রানে ৬ উইকেট হারানো দলে পরিণত হওয়া স্বাগতিকরা আর ঘুরেই দাঁড়াতে পারেনি।বাংলাদেশের জন্য আরেকটি জয়ের পথ খুলে দেওয়া নাহিদ ছয় মাস পর আবার তাঁর ‘আগমনী’ ঘোষণা করা শহরে।
ভিন্ন সংস্করণ হলেও ব্যাটিং উইকেটে গতি দিয়ে এবার কিউই ব্যাটারদের কাঁপানোর সম্ভাবনায়ও তাই বাজি ধরা যায়। তবে এরও আগে প্রশ্ন, একাদশে তাঁর জায়গা মিলবে তো? দুবাইয়ে ভারত ম্যাচ পূর্ব আলোচনার অনেকটা জুড়েই ছিলেন নাহিদ। বিশেষ করে ভারতীয় সাংবাদিকরা তাঁকে নিয়ে কৌতূহলী ছিলেন ভীষণ। কিন্তু পরদিন টসের সময় জানা যায়, নাহিদ একাদশেই নেই। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, টিম কম্বিনেশনের কারণেই তাঁকে রাখা হয়নি। অথচ সেদিন তিন পেসার নিয়ে নামা বাংলাদেশ শিবিরের নাহিদ ভাবনায় অন্য ব্যাখ্যাও ছিল।
সেটি কী? নাহিদের বোলিংয়ের একমুখিতা। বাংলাদেশ দলের এক সদস্যের মুখ থেকেই ব্যাখ্যাটি শুনে নেওয়া যাক, ‘ভারত ম্যাচের (দুবাইয়ের) উইকেট একটু ঝামেলার ছিল। সে কারণে ওখানে স্লোয়ার ও কাটার ভালো করতে জানে এমন বোলারদের নিয়েই একাদশ গড়া জরুরি ছিল। আপনারা জানেন, গতিই নাহিদের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। স্লোয়ার-কাটার যে একদম করতে পারে না, তা নয়; তবে এ রকম ডেলিভারি ওর চেয়ে ভালো করতে জানা বোলারও আছে আমাদের। এ কারণেই ভারত ম্যাচের একাদশ থেকে সে বাদ পড়ে গেছে।’ অবশ্য নাহিদের বোলিংয়ের একমুখিতার শক্তিও এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ, ‘একাদশ গড়ার ক্ষেত্রে উইকেটের চরিত্র ভূমিকা রাখে। দুবাইয়ে ওকে দরকার পড়েনি। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে পড়তে পারে।’
দরকারে নাহিদ কেমন জ্বলতে জানেন, রাওয়ালপিন্ডিতে খেলা বাংলাদেশের সর্বশেষ টেস্টই দিচ্ছে এর সগৌরব ঘোষণা!