অতীত নিয়ে অপরাধবোধ কাজ করে মাইলির

মাইলি সাইরাস, হলিউডের অন্যতম সেরা গায়িকা, অভিনেত্রী। যিনি কেবল টচচার্টই নয়, অসংখ্য ভক্তের হৃদয়েও রাজত্ব করছেন দীর্ঘ সময়। তবে অসম্ভব তারকাখ্যাতি সত্ত্বেও, বিতর্ক সর্বদা তাকে ঘিরে রেখেছে। 

বছরের পর বছর ধরে, তার প্রতিটি কাজই সমালোচকরা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন, সমালোচনা করেছেন। খুব অল্প বয়সে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন এ গায়িকা। তাই সেই বয়সে এই সমালোচনার বিষয়গুলো তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। 

এক সাক্ষাৎকারে সাইরাস খোলাখুলিভাবে বলেছিলেন, ছোটবেলা থেকেই তাকে নিয়ে তৈরি বিতর্কের জন্য তিনি নিজেকে কতটা শাস্তি দিয়েছিলেন এবং নিজেকে কতটা বিচার করেছিলেন। ভাবতেন, আসলেই তিনি ভুল করেছেন, বা তিনিই দোষী। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝার পরে, গায়িকা নিজেকে দোষ দেওয়া বন্ধ করেছেন।

শিশুশিল্পী থেকে আজকের বিশ্বখ্যাত গায়িকা-গীতিকার-অভিনেত্রী হওয়ার যাত্রা সম্পর্কে বলতে গিয়ে মাইলি সাইরাস তার কর্মকান্ডের জন্য মাঝে মাঝে কতটা অপরাধবোধ করতেন তা নিয়ে কথা বলেছেন। 

ব্রিটিশ ম্যাগাজিন ভোগের সঙ্গে কথোপকথনের সময় গায়িকা বলেন, ‘আমি বছরের পর বছর ধরে নিজের চারপাশে কিছু অপরাধবোধ এবং লজ্জা বয়ে বেড়াচ্ছিলাম। কারণ আমি আসলে কতটা বিতর্ক এবং বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেহেতু আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক, আমি বুঝতে পারছি, আমাকে কতটা কঠোরভাবে বিচার করা হয়েছিল। আমি একজন শিশু, তখনকার প্রাপ্তবয়স্করা এটা স্বীকার করেননি।  আমাকে তখন কঠোরভাবে বিচার করেছিল। এখন একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে আমি বুঝতে পারি, আমি কখনই কোনও শিশুকে কঠোরভাবে বিচার করব না।’

মাইলি সাইরাস সেই সময়ের কথা আরও স্মরণ করেন যখন তিনি বয়ঃসন্ধির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন মিডিয়া তার সাথে কঠোর আচরণ করেছিল। শিশু থেকে যখন তিনি একজন নারীতে রূপান্তরিত হচ্ছিলেন, তখন একটি ট্যাবলয়েড একবার তার ব্রণ সম্পর্কে একটি গল্প লিখেছিল, যার শিরোনাম ছিল ‘আ ব্রেকআউট ইয়ার!’ 

এর উত্তরে, গায়িকা তার হতাশার কথা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এতে যে আমি কষ্ট পাব সেটা তারা একটুও ভাবেনি। তখন আমার বয়স  ২০ বছর। সবাই ভাবে, বড় হয়ে গেছি, কিন্তু এখন আমি বলছি, ওই সময় আমি পুরোপুরি বাচ্চা ছিলাম।’

অবশ্য বিতর্ক ও মাইলি সবসময় হাত ধরাধরি করে চলেছেন। ২০০৮ সাল থেকে যখন হান্না মন্টানা তারকার অন্তরঙ্গ ছবি অনলাইনে প্রচারিত হয় তখনও বেশ শোরগোল উঠেছিল। সেই বছরের শেষের দিকে, তিনি ভ্যানিটি ফেয়ারের জন্য টপলেস পোজ দেওয়ার জন্যও সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। 

যদিও তিনি সেই সময়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন, পরে তিনি তার বক্তব্য উল্টে দেন এবং এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছিলেন, ‘আমি দুঃখিত নই।’

২০০৯ সালে টিন চয়েস অ্যাওয়ার্ডস-এ ‘পার্টি ইন দ্য ইউএসএ’-তে তার পরিবেশনাও বেশ সমালোচিত হয়। কারণ আইসক্রিম প্রপে তার নাচকে পোল-ড্যান্সিং হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। পরের বছর, সাইরাসের সিসাপানরত একটি ভিডিও ফাঁস হয়, যা নেটিজেনদের বেশ ক্ষুব্ধ করে তোলে। এখানেই শেষ নয়। তার নাম ঘিরে অন্যান্য বিতর্কও ছিল, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৩ সালের এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে তার টোয়ার্কিং পারফর্মেন্স, যা তার মিউজিক ভিডিও, রেকিং বল-এ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং তালিকাটি এখনও অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু, এখন মাইলি তার কাজের জন্য কোনও লজ্জা বোধ করেন না। ‘ফ্লাওয়ার্স গায়িকা’ মেনে নিয়েছেন, তিনি কে। বলেছেন, সমালোচনা গায়ে মাখার মতো এতো সময় এখন তার নেই।

LEAVE A REPLY