তুরস্কের বিমান শিল্পে নতুন মাইলফলক গড়েছে কিজিলেলমার এএইএসএ রাডার। বায়রাক্তার কিজিলেলমার উন্নত অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিকালি স্ক্যানড অ্যারে রাডার সংযোজনের ফলে এটি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে, যা জটিল অভিযানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
শনিবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মিডলইস্ট মনিটর।
বায়কার ২০২১ সালে বায়রাক্তার কিজিলেলমা প্রকল্প শুরু করে, যা সম্পূর্ণ বেসরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হয়। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর প্রথম উৎপাদনের পর এটি তুরস্কের চোরলু জেলার আকিনজি ফ্লাইট প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষাকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়।
বিমানটি স্বল্প সময়ের মধ্যে ভূমি পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করে এবং মাত্র এক বছরের মধ্যেই ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো আকাশে উড়ে যায়।
বায়কার তার সব প্রকল্প বেসরকারি অর্থায়নে পরিচালনা করলেও তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পে অন্যতম শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০০৩ সালে মানববিহীন আকাশযান গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মসূচি শুরুর পর থেকে কোম্পানির ৮৩ শতাংশ আয় এসেছে রপ্তানি থেকে।
২০২৩ সালে এক দশমিক আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় অর্জন করে এটি তুরস্কের শীর্ষ দশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তালিকায় স্থান পায়।
বিশ্বের বৃহত্তম মানববিহীন আকাশযান রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০২৪ সালেও বায়কার তার আন্তর্জাতিক সাফল্য অব্যাহত রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি ৯০ শতাংশ রাজস্ব আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অর্জন করেছে।
এ পর্যন্ত ৩৪টি দেশের সঙ্গে বায়রাক্তার টিবি দুই এবং ১১টি দেশের সঙ্গে বায়রাক্তার আকিনজি রপ্তানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বায়কার।
কিজিলেলমার এএইএসএ রাডার হলো অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিকালি স্ক্যানড অ্যারে (Active Electronically Scanned Array – AESA) রাডার, যা বায়রাক্তার কিজিলেলমা নামের তুরস্কের উন্নত মানববিহীন যুদ্ধবিমান (ইউসিএভি) এর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এএইএসএ রাডার কী?
এটি একটি উন্নত রাডার ব্যবস্থা, যা একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে সিগন্যাল পাঠিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন দিকে তা পুনঃনির্দেশ করতে পারে। এর ফলে এটি তথ্য সংগ্রহ, ট্র্যাকিং, লক্ষ্য নির্ধারণ এবং জ্যামিং প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী।
কিজিলেলমার জন্য এটির ভূমিকা
১. উন্নত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ: রাডারটি উন্নত সেন্সর ক্ষমতা দিয়ে দ্রুতগতির লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত ও অনুসরণ করতে পারে।
২. জটিল অভিযানের সক্ষমতা: এটি বিমানটিকে প্রতিকূল পরিবেশে সফলভাবে অভিযানের সুযোগ দেবে।
৩. স্বয়ংক্রিয় টার্গেট লক: শত্রুপক্ষের রাডার ও যুদ্ধবিমানের অবস্থান নির্ণয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
৪. জ্যামিং প্রতিরোধ: শত্রুর ইলেকট্রনিক জ্যামিং প্রতিহত করে নির্ভুলভাবে কাজ করতে সহায়তা করবে।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাতে এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বায়রাক্তার কিজিলেলমা হচ্ছে তুরস্কের প্রথম স্টেলথ ইউসিএভি, যা এএইএসএ রাডারের মাধ্যমে উন্নত যুদ্ধ সক্ষমতা অর্জন করবে। এটি যুদ্ধক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হামলা চালাতে সক্ষম, যা তুরস্কের সামরিক প্রযুক্তিকে বিশ্বমঞ্চে আরও এগিয়ে নেবে।