যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এবার লেবাননে হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। শনিবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলের বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে দুই শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন।
এক বছর ধরে ইসরাইলি বাহিনী ও লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর পালটাপালটি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপরে প্রথমবারের মতো দেশটিতে হামলা চালাল ইসরাইল।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর দাবি, শনিবার লেবানন থেকে ইসরাইল লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা দেশটিতে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করে।
তবে হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, তারা ইসরাইলে কোনো হামলা চালায়নি। এসব হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যুদ্ধবিরতিও মেনে চলছে তারা। এদিকে শনিবার ইসরাইলে রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো সশস্ত্রগোষ্ঠী বা সংগঠন।
ইসরাইলের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরাইল লক্ষ্য করে শনিবার সকালে ছয়টি রকেট ছোড়া হয়। এর মধ্যে তিনটি সীমান্ত অতিক্রম করেছিল। এসব রকেট হামলা প্রতিহত করে ইসরাইলি বাহিনী।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দুই দফা ইসরাইলি হামলায় দক্ষিণাঞ্চলের বিনত্ জাবেলি ও তুলিনে তিনজন এবং বন্দরনগরী টায়ারে ৫ জন নিহত হন।
লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরাইল সীমান্তবর্তী দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার বিমান হামলার পাশাপাশি কামান থেকে গোলাবর্ষও করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
ইসরাইল লেবানন সরকারকে চাপে রাখতে এ হামলা চালাচ্ছে বলে মনে করেন কাতারের হামাদ বিল খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত। তিনি আলজাজিরাকে বলেন, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে যত দিন লেবাননে ইসরাইলি দখলদারি চলবে, তত দিন প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে হিজবুল্লাহ। আর এবার ইসরাইলের হামলা আগের মতো তীব্র না হলেও, তারা সব সময় বৈরুত সরকারকে চাপের মধ্যে রাখতে চাচ্ছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত সোমবার ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এরপর থেকে বিগত পাঁচদিনে গাজায় ইসরাইলের হামলায় ৬৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই শতাধিক শিশু।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরাইল আবার হামলা চালানোয় এর নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ। এর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে লেবাননে হামলা শুরু করল বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইসরাইল।