পাকিস্তানের সামরিক গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর জানিয়েছে, দেশটির উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গুলাম খান কাল্লায় আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে প্রবেশের চেষ্টাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অন্তত ১৬ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
রোববার পাকিস্তান আইএসপিআর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। খবর জিও নিউজের।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সীমান্তে সন্ত্রাসীদের একটি দলকে অনুপ্রবেশ করতে দেখে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তাদের প্রতিহত করে।
বিবৃতিতে উল্লেখ, ‘আমাদের সেনারা কার্যকরভাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় এবং অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। প্রচণ্ড গোলাগুলির পর ১৬ জন খারিজি (সন্ত্রাসী) নিহত হয়েছে’।
পাকিস্তান বারবার আফগান সরকারের প্রতি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যকর করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আফগান সরকারের উচিত তাদের ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে না দেওয়া’।
দেশটির সেনাবাহিনী আরও জানায়, নিরাপত্তা বাহিনী পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদের মূলোচ্ছেদ এবং সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি অসুরক্ষিত সীমান্ত রয়েছে। যা উভয় দেশের জনগণ ও বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে ইসলামাবাদ আফগানিস্তানকে আহ্বান জানিয়ে আসছে, যাতে তাদের ভূখণ্ডকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মতো গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা ব্যবহার করতে না দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) দাখিল করা একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কাবুল সরকার টিটিপি-কে লজিস্টিক, সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।
এর আগে জানুয়ারিতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচিস্তানের ঝোব জেলায় পাক-আফগান সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৬ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (PICSS)-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার হার ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, মোট ৭৪টি সন্ত্রাসী হামলা হয়, যাতে ৯১ জন নিহত হন। যার মধ্যে ৩৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ২০ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ৩৬ জন সন্ত্রাসী।
এছাড়া ১১৭ জন আহত হন। যার মধ্যে ৫৩ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ৫৪ জন সাধারণ নাগরিক এবং ১০ জন সন্ত্রাসী।
সন্ত্রাসী হামলায় খাইবার পাখতুনখাওয়া (কেপি) প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার পরই বেলুচিস্তান রয়েছে। কেপি-র সাধারণ জেলাগুলোতে ২৭টি হামলা হয়, যাতে ১৯ জন নিহত হন, যার মধ্যে ১১ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ৬ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ২ জন সন্ত্রাসী।
কেপি-র উপজাতীয় জেলা (প্রাক্তন ফাটা) ১৯টি হামলার শিকার হয়, যাতে ৪৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে ১৩ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ২৫ জন সন্ত্রাসী।