২০২০ সালের ১৪ জুন, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর খবর যেন গোটা ভারতবর্ষকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। একদিকে করোনার সঙ্গে লড়াই করছে মানুষ, অন্যদিকে সুশান্তের আচমকা আত্মহত্যার খবর যেন আরও কিছুটা মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছিল সবাইকে। সুশান্তের মৃত্যুর অভিযোগে রিয়া চক্রবর্তী এবং তার গোটা পরিবারকে দায়ী করা হয়। এজন্য রিয়াকে যেতে হয় কারাগারে। ছাড়পত্র নিয়ে কারাবাসের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনলেন এই অভিনেত্রী।
আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, সিবিআই তার শেষ রিপোর্টে জানিয়ে দিয়েছে, আত্মহত্যাই করেছিলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল বিস্তর। রিয়ার বিরুদ্ধে ছিল একাধিক অভিযোগ। মাদকযোগের অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছিলেন অভিনেত্রী তথা সুশান্তের সাবেক প্রেমিকা। ২৭ দিন কারাগারে ছিলেন তিনি।
কারাগারের অভিজ্ঞতাও জানিয়েছেন রিয়া। কারাগারের ভেতরের সঙ্গে বাইরের জগতের কোনো মিল নেই বলে জানান অভিনেত্রী। তার কথায়, কারাগারের মধ্যে কোনো সমাজ নেই। তাই বাকি দুনিয়ার থেকে পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা। তবে কারাগারের অন্দরে সমতা রয়েছে। ওখানে আলাদা করে কোনো পরিচিতি নেই কারো। সবাই এক একটা সংখ্যা সেখানে।
তদন্ত চলাকালীন যে নারীরা কারাগারে থাকেন, তাদের বেশির ভাগই নির্দোষ বলে দাবি রিয়ার। অভিনেত্রীর কথায়, আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, অভিযুক্ত নারীদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নির্দোষ ছিলেন। বাকি ২০ শতাংশ স্বীকার করতেন যে তারা অপরাধ করেছেন। হয় নিজেকে বাঁচানোর জন্য অপরাধ করেছেন বা অন্য কোনো কারণে।
রিয়া আরও বলেন, বিচার পেতে অনেকটা সময় লাগে। তাই এই নির্দোষ নারীদেরও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় কারাগারে কাটাতে হয়। কেউ কেউ দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই সাত-আট বছর কারাগারে কাটিয়ে দেন।
কারাগারের ভেতরে কী কী অসুবিধা হয় সেগুলিও জানিয়েছেন রিয়া। অভিনেত্রীর কথায়, কারাগারের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যায় না। বাইরের জগতের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ নেই। কেউ হয়তো পরিবারের সদস্যদের হারিয়ে ফেলেছেন দীর্ঘ দিন কারাগারে থাকতে থাকতে। প্রতি দিন কারাগারে টিকে থাকাই কঠিন। এক একটা দিন এক একটা বছরের মতো মনে হয় কারাগারের মধ্যে। আমিও কঠিন সময় কাটিয়েছিলাম। অবশ্যই কারাগারের মধ্যে অবসাদ রয়েছে। সেই অন্ধকার জগতের সাক্ষী আমিও।