ইইউর হুঁশিয়ারির পরও সিরিয়ায় আবার হামলা চালাল ইসরাইল

ইসরাইলি গোলাবর্ষণে মঙ্গলবার সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা। এর আগে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, সিরিয়ার সীমানায় তাদের সেনাদের ওপর গুলি চালানো হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। 

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ। 

সীমান্ত এলাকায় এই সহিংসতা ইসরাইল ও সিরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। সিরিয়ায় ইসলামপন্থি নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। গত ডিসেম্বর মাসে বিদ্রোহীরা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়।  

ইসরাইল আগেই জানিয়ে দিয়েছে যে, দক্ষিণ সিরিয়ায় কোনো ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতি তারা সহ্য করবে না। এ কারণে ইসরাইল নিজেও সীমান্ত অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করেছে। তবে সিরিয়ার নতুন সরকার জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে নতুন কোনো ফ্রন্ট খুলতে চায় না।  

মঙ্গলবার ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, দক্ষিণ সিরিয়ায় সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরাইলি বাহিনীর দিকে গুলি ছোড়ে, যদিও ইসরাইলি সেনারা সিরিয়ার ভূখণ্ডের ভেতরে ছিল কি না, সে বিষয়ে তারা কিছু বলেনি। ইসরাইলি বাহিনী পাল্টা গুলি চালায় এবং পরে একটি যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালানো হয়। তবে হতাহতের বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি, শুধু বলা হয়েছে, ‘টার্গেটে আঘাত হেনেছে।’  

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, দারা প্রদেশের কয়া শহরে ইসরাইলি ট্যাংক হামলায় চারজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। এক সিরীয় নিরাপত্তা সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।  

এর আগে ইসরাইল জানিয়েছিল, তারা সিরিয়ার হোমস প্রদেশে দুটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।  

এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘সামান্য আগে, আইডিএফ (ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটি তাদমুর ও টি-ফোরের কিছু অবশিষ্ট সামরিক সক্ষমতায় আঘাত হেনেছে।’  

আসাদের শাসনামলে ইসরাইল সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত সামরিক স্থাপনা ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর জন্য পাঠানো অস্ত্রবাহী কাফেলাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালাত। কিন্তু আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেই অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে গেলেও সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে ইসরাইলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।  

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কাল্লাস মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেছেন, ইসরাইলের এই হামলাগুলো ‘আরও সংঘাত উসকে দিতে পারে।’  

ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডেন সারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কাল্লাস বলেন, ‘আমরা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) মনে করি, এই ধরনের পদক্ষেপ অপ্রয়োজনীয়, কারণ সিরিয়া এই মুহূর্তে ইসরাইলকে আক্রমণ করছে না।’

LEAVE A REPLY