২৬ মার্চ আমাদের শিখিয়ে যায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে : কাদের গনি চৌধুরী

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ‘আমাদের এই স্বাধীনতা শুধু একটি পতাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের গর্ব, আমাদের অধিকার এবং আমাদের দায়িত্বের প্রতীক। এই দিনটি আমাদের শিখিয়ে যায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে।

আজ বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষ সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে শহীদ জিয়ার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মাজার জিয়ারত, মাজারে সূরা ফাতিহা পাঠ ও দোয়া করা হয়। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, ডা. রফিকুল ইসলাম লাবু, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, প্রফেসর ড. শামীম, ইঞ্জিনিয়ার হানিফ, ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দ, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, হাফিজুর রহমান, সুজন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতাই আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পেরেছে বলেই আজ আমরা একটি গর্বিত জাতি হিসেবে পৃথিবীতে জায়গা করে নিতে পেরেছি।

স্বাধীনতা আমাদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন এনেছে। স্বাধীনতা আমাদের জনগণের মনে স্বাবলম্বী ও উদ্যোক্তা হওয়ার স্পৃহা গড়ে দিয়েছে। আমরা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়েছি, প্রতিবাদী হয়েছি। আমাদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া কোনো ব্যবস্থাই আমরা বেশিদিন সহ্য করিনি।

১৯৯০ সালে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়েছি। গত বছরের ছাত্র-গণ-আন্দোলনেও আমরা দুনিয়ায় ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর শাসন উৎখাত করেছি। আমরা বারবার সংগ্রাম করে অন্যায্য ব্যবস্থার পরিবর্তন এনেছি। নিজেদের বীরের জাতি হিসেবে বারবার প্রমাণ করছি। আমরা এটাও প্রমাণ করেছি যে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে জানি।

পেশাজীবীদের এ নেতা বলেন, গত ১৮ বছর দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। স্বৈরাচারী শাসক জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে তাদের স্বাধীনতা ও মৌলিক সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা কেড়ে নিয়ে তাদের প্রজা বানিয়ে রেখেছিল। কিন্তু বীরের জাতি একাত্তরের মতো রক্ত দিয়ে নিজেদের মালিকানা ফিরিয়ে এনেছে। জনরোষের ভয়ে খুনি হাসিনা ও তার দোসররা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের প্রয়োজন একটি উন্নত, শক্তিশালী, সমৃদ্ধ এবং মানবিক দেশ গড়ে তোলা। যেখানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, গুম, খুন থাকবে না। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। দিনের ভোট রাতে হবে না। জনগণ তার মৌলিক অধিকার পুরোপুরি ভোগ করবে। স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ তখনই পূর্ণ হবে, যখন আমাদের প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকার ও সুযোগ পাবে। আমাদের দেশকে উন্নত করতে হলে দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দারিদ্র্য, অশিক্ষা এবং কুসংস্কারের শৃঙ্খল ভেঙে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সমাজের প্রত্যেক স্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তি বজায় রাখতে হবে। আমরা আর কোনো আয়নাঘর দেখতে চাই না।’

LEAVE A REPLY