আম্বেদকর জয়ন্তীর দিনে, যখন সারা দেশ ড. বি.আর. আম্বেদকরের উত্তরাধিকার স্মরণ করছিল, তখন তেলেঙ্গানার কমারেড্ডি জেলায় দলিত কর্মীদের উপর পুলিশি দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) লিংগমপেট মণ্ডল সদর দপ্তরে ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র সঙ্গে যুক্ত দলিত কর্মীরা যখন বাবাসাহেব আম্বেদকরের ছবি সংবলিত ফ্লেক্স লাগানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন তাদেরকে পুলিশ আটক করে এবং একাধিকজনকে জোরপূর্বক পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন দলিত কর্মীকে অন্তর্বাস পরিহিত অবস্থায় টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ সদস্যরা। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সিয়াসাত ডটকমকে লিংগমপেট থানার কনস্টেবল রাজু জানান, ‘কয়েকজন বিআরএস কর্মী, যাদের গলায় দলের গোলাপি স্কার্ফ ছিল, ফ্লেক্স লাগানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু মণ্ডলে ফ্লেক্স লাগানো নিষিদ্ধ থাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত সচিব তা আটকান। এর পরেই বিআরএস কর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় এবং তারা আম্বেদকর চৌরাস্তার মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে, যার ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।’
তিনি জানান, পঞ্চায়েত সচিব পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সরাতে গেলে, তারা অনড় থাকেন। এ সময় পুলিশ জোরপ্রয়োগ করে তিনজন বিআরএস কর্মী — রাপার্থি ভূপতি, বনতারিপল্লি সাইলু এবং মুদাম সাইলু — কে আটক করে। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান কনস্টেবল রাজু।
বিআরএস নেতার প্রতিবাদ
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে, বিআরএসের কার্যনির্বাহী সভাপতি কে টি রামা রাও (কেটিআর) কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে তিনি কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে লেখেন, ‘আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীতে তারই প্রতিমার ছায়ায় একজন দলিতকে উলঙ্গ করে গ্রেফতার করা হয়েছে! আমি জানতে চাই, আম্বেদকর জয়ন্তীতে একটি ব্যানার বাঁধার চেষ্টা কী এমন অপরাধ যে এতটা নির্দয়তা দেখাতে হলো’?
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেলেঙ্গানার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দলিত সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও কড়া প্রতিক্রিয়া আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।