বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছে মার্কিন প্রতিনিধি দল

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই উপসহকারী সচিব—দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর নিকোল চুলিক এবং পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়ক ব্যুরোর অ্যান্ড্রু হেরাপ। বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) ও অন্যান্য মার্কিন কূটনীতিকও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, জনগণ-পর্যায়ে সম্পর্ক এবং রোহিঙ্গা সংকট।  

পররাষ্ট্রসচিব বৈঠকে সরকারের নেওয়া সংস্কারমূলক পদক্ষেপ তুলে ধরেন এবং জানান, বর্তমানে এগারোটি সংস্কার কমিশন বিভিন্ন খাতে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের প্রশংসা করে মার্কিন প্রতিনিধি দল সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানায়।

বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে আলোচনার সময় পররাষ্ট্রসচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠির প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সরকার বিবেচনা করছে। এ সময় মার্কিন প্রতিনিধি দল জানায়, ৯ জুলাই ২০২৫-এর মধ্যে সমস্যা সমাধানে ৯০ দিনের সময়কাল খুবই সংক্ষিপ্ত, তাই এ সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। 

পররাষ্ট্রসচিব এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ ৯০ দিনের বিরতিকে কোনোভাবেই ‘স্থগিত’ হিসেবে দেখছে না বরং বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে পারস্পরিক স্বার্থে নতুন পরিস্থিতির সমাধান খুঁজে বের করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

শ্রমমান উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রসচিব। পাশাপাশি সম্প্রতি ইউএসএইড কর্তৃক স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে অর্থায়ন হ্রাসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশনে (ইউএসডিএফসি) বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য সহযোগিতাও কামনা করেন। মার্কিন প্রতিনিধি দল এসব বিষয়ে অগ্রগতির প্রশংসা করে কংগ্রেসের অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে পররাষ্ট্রসচিব যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের ফলে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়ে আলোকপাত করে আসন্ন নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য রোহিঙ্গা সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ ও সমর্থন কামনা করেন তিনি।  মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রশংসা করে এবং সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেয়।

বৈঠকের শেষে উভয় পক্ষ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্বকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

LEAVE A REPLY