ভুটানের লিগে খেলতে গিয়ে অনুশীলনে সাবিনারা। ছবি : সংগৃহীত
এর আগে নিজেদের দেশেও তাঁরা লিগ খেলেছেন। এখন খেলছেন বিদেশের লিগেও। কিন্তু চেনা ভুবনের সঙ্গে অচেনা আঙিনার ফুটবল মিলছে না একটুও। দেশে খেলে খেলে ক্লান্ত-শ্রান্ত নারী ফুটবলারদের কিনা ভুটানের লিগ খেলতে গিয়ে মিলবে অফুরন্ত অবসর।
গত বছর দেশে ৯টি দলকে নিয়ে মেয়েদের ফুটবল লিগ শেষ করা হয়েছিল মাত্র ৩০ দিনেই। এই এক মাসের মধ্যেই সাবিনা খাতুন-সানজিদা আক্তারদের খেলতে হয়েছিল আটটি করে ম্যাচ। যাকে বলে দম ফেলার ফুরসতই পাচ্ছিলেন না তাঁরা। এবার সাবিনাসহ জাতীয় দলের ১০ ফুটবলার ভুটান প্রিমিয়ার লিগ খেলতে গিয়ে একেবারেই ভিন্ন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
যেখানে খেলোয়াড়দের টানা খেলার ক্লান্তিতে ফেলার কোনো সুযোগই রাখা হয়নি।
১০ দলের লিগ হলেও সূচি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে মাসে সর্বোচ্চ তিনটি করে ম্যাচ খেলতে হবে একেকটি ক্লাবকে। কোনো মাসে দুটি, আবার কোনো মাসে রাখা হয়েছে একটি ম্যাচও। এমনও আছে যে এক মাসে সূচিতে কোনো কোনো ক্লাবের খেলাই নেই।
তাতে সাবিনা-ঋতুপর্ণাদের ভুটানে অবসরেই কাটবে বেশি।
সেখানে যাওয়া ১০ ফুটবলার তিনটি আলাদা ক্লাবের হয়ে খেলবেন। সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া খেলবেন পারো এফসির হয়ে। সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্দা ও শামসুন্নাহার সিনিয়ররা চাপাবেন থিম্পু সিটির জার্সি। মাসুরা পারভিন, রুপনা চাকমা ও কৃষ্ণা রানীর ক্লাব ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড।
ml/container.html” width=”300″ height=”250″>আগামীকাল লিগ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে কয়েক দিন পিছিয়ে যাচ্ছে লিগ।
শুরুর নতুন দিন-ক্ষণ জানায়নি আয়োজকরা। ২৮ এপ্রিল নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলার কথা পারো এফসির। এরপরের ম্যাচ ১৩ই মে। মাঝে ১৫ দিনের বিরতি। জুন মাসে খেলবে একটি ম্যাচ। সানজিদাদের দল থিম্পু এফসির যেমন মে মাসে কোনো খেলাই নেই। এক ম্যাচের পর লম্বা বিরতি খানিকটা ব্যতিক্রম লাগছে সানজিদার কাছে, ‘আমরা তো দুই-তিন দিন পর পর ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত। বাংলাদেশে তো এক মাসে লিগ শেষ হয়ে যায়। আর এখানে এক মাসে দুই-তিনটা ম্যাচ খেলতে হবে। এটা কেমন জানি! যদিও ওদের নিয়ম এটা। এই সময়ে অনুশীলনের মধ্যে থাকব আমরা।’
কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে লম্বা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন সাবিনা খাতুনরা। পরে মিটমাট হলেও গত ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এশিয়া কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি ক্যাম্প রেখে তাঁরা ভুটানে গেছেন লিগ খেলতে। খেলোয়াড়ভেদে মাসিক ৬০ ও ৭০ হাজার টাকায় ছয় মাসের চুক্তি করেছেন তাঁরা। আগামী জুনে বাছাই পর্বের আগে জর্দানে স্বাগতিক দেশ ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল।
এমন গুরুত্বপূর্ণ সফরের আগে মেয়েদের বিদেশি লিগে খেলার ছাড়পত্র দেওয়া কতটা যৌক্তিক, সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে। বাফুফে নারী ফুটবল উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘মেয়েরা তো একটা (বিরূপ পরিস্থিতি) অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। ওদের মানসিক পরিবর্তনের দরকার ছিল। ওরাও চাচ্ছিল যে খেলে ফর্মে ফিরবে। এ কারণে আমরা অনুমতি দিয়েছি। সাবিনার সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে বলেছে, ওখানে অনুশীলন সুবিধা ভালো। সেদিক থেকে ওরা অনুশীলনের মধ্যে থাকবে। ফিট থাকবে।’ ভুটান লিগে নজর রাখছেন পিটার বাটলারও। ফর্ম ও ফিটনেস বিবেচনায় যাঁরা এগিয়ে থাকবেন তাঁদের চূড়ান্ত দলে ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন এই ব্রিটিশ কোচ, ‘টিভিতে বা অনলাইনে খেলা দেখার সুযোগ থাকলে আমি দেখব। এ ছাড়া আমার প্রতিনিধি আছে, সে-ও আমাকে জানাবে। ভালো করলে এবং ফিটনেস ঠিক থাকলে তাদেরও সুযোগ আছে দলে থাকার।’