গাজায় ১৫ জন জরুরি সেবা কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যাচারে ভরা’ এবং ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট।
রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র নেবাল ফারসাখ ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘প্রতিবেদনটি মিথ্যাচারে পূর্ণ। এটি অবৈধ এবং গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি হত্যাকাণ্ডকে ন্যায্যতা দেয় এবং দায়ভার স্থানান্তর করে ফিল্ড কমান্ডের ‘ব্যক্তিগত ভুল’-এর ওপর। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
গত ২৩ মার্চ ভোরে গাজার দক্ষিণাঞ্চল রাফাহ শহরের তেল আল-সুলতান এলাকায় অভিযান চালানোর সময় ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এতে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্টের আটজন কর্মী, সিভিল ডিফেন্সের ছয়জন কর্মী এবং এক জাতিসংঘ কর্মী প্রাণ হারান।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে দায় স্বীকার করলেও দাবি করেছে, ঘটনাটি একটি ‘অপারেশনাল ব্যর্থতার’ ফল।
তবে রেড ক্রিসেন্ট বলছে, এটি ছিল একটি ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত হামলা, যার মাধ্যমে মানবিক সাহায্যকর্মীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।
ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত দাবি করেছিল। তবে ইসরাইলি বাহিনীর সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনে দায় এড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, চলমান গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ইসরাইলি হামলার শিকার হয়ে আসছেন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।
এর আগে রেড ক্রিসেন্টের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে আটজন সংস্থাটির নিজস্ব কর্মী এবং ছয়জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য। এ ছাড়া একজন জাতিসংঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মী ছিলেন। আর নিখোঁজ রয়েছেন এক উদ্ধারকর্মী।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানায়, নিহতরা আহতদের চিকিৎসা দিতে যাওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। ঘটনাটি ঘটে রাফাহর হাশাশিন এলাকায়, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী গোলাবর্ষণ করছিল।
সংস্থাটি আরও জানায়, মরদেহগুলো বালির নিচে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। যার ফলে উদ্ধার কাজ কঠিন হয়ে পড়ে। কিছু মরদেহ পচন ধরার কারণে শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে যায়। রেড ক্রিসেন্টের চিকিৎসকদের ওপর এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে বলেও জানায় সংস্থাটি।