স্টার সিনেপ্লেক্স। ছবি : ইমরুল নূর
সিনেমা দেখার জন্য হলের সামনে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়, টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইন কিংবা অগ্রিম টিকিটের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়া—এই দৃশ্যগুলো যখন বাংলাদেশের সিনেমার ক্ষেত্রে দেখা যায় তখন সেটা সুখকরই বটে। হ্যাঁ, সাম্প্রতিককালে দেশের সিনেমার ক্ষেত্রে এ রকম দৃশ্য দেখা গেছে বেশ কয়েকবার।
সর্বশেষ গেল ঈদেও এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকটি ছবি আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং দর্শকদের হলে টেনে নিয়ে গেছে ব্যাপকভাবে।
ঈদের তৃতীয় সপ্তাহেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এসব ছবি দেখার জন্য হলে ভিড় করছেন দর্শকরা। এ ক্ষেত্রে শহরের জনপ্রিয় মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’-এর কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে দর্শকদের দীর্ঘ সারি, অনলাইনে অগ্রিম টিকিটের চাপ সামলাতে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে।
দেশের সিনেমা দেখার জন্য দর্শকদের এই চাপ উপভোগই করছে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এ জন্য দর্শকদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চান তারা।
দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সিনেমা দেখার জন্য দর্শকরা যেভাবে আগ্রহী হয়ে আসছেন, এটা খুবই আনন্দদায়ক। দেশের সিনেমার নতুন দিন তৈরি হয়েছে।
ইন্ডাস্ট্রির জন্য এটা আশাব্যঞ্জক। আমরা চাই, বাংলা সিনেমা দেখার জন্য সব সময় এ রকম ভিড় লেগে থাকুক। আসলে দর্শকরাই তো আমাদের চালিকাশক্তি। আমাদের যা কিছু আয়োজন সব দর্শকদের জন্যই। দর্শকদের ভালোবাসাই স্টার সিনেপ্লেক্সকে এ পর্যন্ত এনেছে।
আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য, দেশের সিনেমার সঙ্গে থাকার জন্য দর্শকদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সাথে সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক, পরিবেশক ও কলাকুশলী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আর বরাবরের মতো এ যাত্রায় আমাদের সহযোগিতা করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। গণমাধ্যম সব সময় আমাদের পাশে থেকেছে। দেশের সিনেমার পাশে থেকেছে। সাংবাদিকদের ইতিবাচক ভূমিকা এবং দেশের সিনেমাকে প্রমোট করা পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করছে।’
সেই সঙ্গে সিনপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানান, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ করছি যে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু বিষয় উঠে এসেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিভ্রান্তিমূলক। এ ধরনের ভিত্তিহীন কোনো তথ্য উপস্থাপন না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ রইল। দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের প্রতি আমরা বরাবরই দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমরা নিয়মিতভাবে দেশি-বিদেশি সব ধরনের সিনেমা প্রদর্শন করে থাকি। মূলধারার সিনেমার পাশাপাশি ভিন্নধারার এমন অনেক বাংলা সিনেমা যেগুলোর দর্শকসংখ্যা অত্যন্ত সীমিত হওয়া সত্ত্বেও আমরা প্রদর্শন করে থাকি। তাই সবার প্রতি অনুরোধ, কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে যেকোনো তথ্যের প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের কাছে প্রিয় নাম ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’। শহুরে তরুণ-তরুণী কিংবা বিভিন্ন বয়সী মানুষ হলে গিয়ে সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে দ্বিধাহীনভাবে স্টার সিনেপ্লেক্সে যাওয়ার কথাই ভাবেন। নানামুখী সংকটের কারণে একসময় দর্শক যখন হলবিমুখ হয়ে পড়েছিলো, একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল দেশের পুরনো অনেক হল তখন নতুন প্রাণের সঞ্চার করে এই মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল।
রুচিসম্মত ও নান্দনিক পরিবেশ, সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্বলিত সাউন্ড সিস্টেমসহ নানা অভিনবত্বের মধ্য দিয়ে সিনেমা দেখার নতুন এক যুগে প্রবেশ করে দেশের দর্শক। পরিবার নিয়ে হলে গিয়ে সিনেমা দেখার দিন ফিরে আসে আবার। দেশের সিনেমা কিংবা বিদেশের সিনেমা, স্টার সিনেপ্লেক্সই প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে। দর্শক চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি দিনে দিনে তাই স্টার সিনেপ্লেক্সের পরিধিও বেড়েছে। বর্তমানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে এর অনেকগুলো শাখা স্থাপিত হয়েছে। শুধু সিনেমা প্রদর্শন নয়, দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের পৃষ্ঠপোষকতায় স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের নানামুখী প্রয়াসও উল্লেখযোগ্য।