অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য সুপরিচিত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী মানবধিকার নিয়ে বেশ সোচ্চার তিনি। কাজ করছেন শুভেচ্ছাদূত এবং পরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের বিশেষ দূত হিসেবে। এমনিতে আগে থেকেই ফিলিস্তিনে ইসরাইলিদের বর্বর হামলার বিরুদ্ধে তিনি। সম্প্রতি আবারো ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আওয়াজ তুলেছেন এ অভিনেত্রী।
গাজায় চলমান ইসরাইলি সামরিক কর্মকাণ্ড ও গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি শক্তিশালী বার্তা শেয়ার করেছেন। সম্প্রতি একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে, জোলি ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের একটি প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন জোলি, যেখানে গাজাকে ফিলিস্তিনি এবং তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করা মানবিক কর্মীদের জন্য একটি ‘গণকবর’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এ পোস্টের মাধ্যমে তিনি গাজায় ইসরাইলি বিমান, স্থল এবং সমুদ্র আক্রমণের তীব্রতা তুলে ধরেছেন, যা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের জীবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের দিকে পরিচালিত করেছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, ‘কেবল ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃশংস সামরিক হামলাই নয়, চলমান অবরোধ ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক সাহায্য সরবরাহকেও বাধাগ্রস্ত করেছে। এটি জনগণের তীব্র চাহিদা পূরণের প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে, যা সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।’ যদিও জোলির এমন পোস্টে বেশ ক্ষেপেছেন ইসরাইলি উগ্র ডানপন্থিরা। তারা অভিনেত্রীর অবস্থানের বেশ সমালোচনা করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে, এতে মোটেও বিচলিত নন বলে জানিয়েছেন জোলি। বরং শরণার্থী ও মানবাধিকারের জন্য অভিনেত্রীর দীর্ঘস্থায়ী সমর্থন তার মন্তব্যকে আরও জোরাল করে তুলেছে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে শুভেচ্ছাদূত এবং পরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জোলি গাজার সহিংসতা নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি গাজায় এমন ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, যা আগের চেয়েও অনেকগুণ বেশি। চলমান সামরিক অভিযানের ফলে এই অঞ্চলটি ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে। বাড়িঘর, হাসপাতাল এবং স্কুল ইসরাইলি বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। অ্যাঞ্জোলিনা জোলির পাশাপাশি ইসরাইলের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের প্রতিক্রিয়ায়, আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থাগুলো হস্তক্ষেপ করেছে।
গত বছরের নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।