পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মঙ্গলবার এক সরকারি সফরে তুরস্ক যাচ্ছেন। সফর উপলক্ষে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করবেন এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও মতবিনিময় করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দীর্ঘদিনের মিত্র এবং কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে নিয়মিত উচ্চপর্যায়ের আদান-প্রদান হয়ে থাকে, যা দুই জাতির ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে ‘উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত সহযোগিতা কাউন্সিল’ নামক একটি প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্ব পর্যায়ের কাঠামো, যার মাধ্যমে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে সহযোগিতা ও সমন্বয় করা হয়।
২০২৫ সালের ১২–১৩ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদে এই কাউন্সিলের সপ্তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আসন্ন বৈঠকটি এই শক্তিশালী সংলাপের ধারাবাহিকতা এবং দুই দেশের বহুস্তরীয় অংশীদারত্বকে আরও উচ্চতর স্তরে উন্নীত করার যৌথ অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
এদিকে, চলতি মাসের শুরুতেই পাকিস্তান ও তুরস্ক একটি যৌথ দরপত্র চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, যার আওতায় পাকিস্তানের উপকূলীয় অববাহিকায় সম্ভাব্য জ্বালানি সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য উভয় দেশ যৌথভাবে দরপত্রে অংশগ্রহণ করবে।
পাকিস্তান মিনারেলস ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম ২০২৫-এর সাইডলাইনে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তুরস্কের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি ‘টার্কিশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন’–এর প্রধান নির্বাহী আহমেদ তুর্কওগ্লু, মারি এনার্জিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহিম হায়দার, ওজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ হায়াত লাক এবং পিপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান আব্বাসি।
এই যৌথ উদ্যোগে ৪০টি অফশোর ব্লক অনুসন্ধানের পরিকল্পনা রয়েছে, যা পাকিস্তানের মাকরান ও ইন্দাস অববাহিকায় অবস্থিত। এটি পাকিস্তানের আপস্ট্রিম জ্বালানি খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে অফশোর ব্লক বিড রাউন্ড চালু করে, যার আওতায় ৪০টি অনুসন্ধান ব্লকের দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ পাকিস্তানের জ্বালানি খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের পথ সুগম করবে।