দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন। ফাইল ছবি : এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রসিকিউটররা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, একটি এয়ারলাইনে জামাতার চাকরি লাভের ঘটনায় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
চেওনজু জেলা প্রসিকিউটর অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এয়ারলাইনে জামাতার চাকরি নিশ্চিত করতে সহায়তার বিনিময়ে ২১৭ মিলিয়ন ওন (প্রায় দেড় লাখ মার্কিন ডলার) গ্রহণের ঘটনায় মুনকে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’
এ মামলাটি দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান রাজনৈতিক নাটকের মাত্রা আরো বাড়াল, যেখানে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মার্শাল ল জারি করায় পদচ্যুত হওয়ার পর ৩ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকা মুন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন।
তার সময়েই কিম জং উন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রসিকিউটরদের মতে, মুনের জামাতাকে কোনো রকম অভিজ্ঞতা বা প্রাসঙ্গিক যোগ্যতা ছাড়াই থাই ইস্টার জেট নামের একটি স্বল্পমূল্যের বিমান সংস্থায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রসিকিউটরদের ভাষ্য মতে, এই বিমান সংস্থাটি কার্যত মুনের দলীয় এক সাবেক এমপির নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্টের আনুকূল্য লাভের আশায় জামাতাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে জামাতাকে প্রদান করা বেতন ও অন্য আর্থিক সুবিধাগুলো প্রসিকিউটরদের মতে ‘প্রকৃত বেতন নয়, বরং প্রেসিডেন্টকে প্রদত্ত ঘুষ হিসেবেই বিবেচিত’।
পরে মুনের মেয়ে ও জামাতার মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।
মুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার দুজন সাবেক প্রেসিডেন্ট এখন একই সঙ্গে আইনের মুখোমুখি হলেন। অন্যদিকে অপমানজনকভাবে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইউন বর্তমানে ৩ ডিসেম্বরের ছয় ঘণ্টার মার্শাল ল ঘোষণার ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিচারের মুখোমুখি। দোষী সাব্যস্ত হলে ইউনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ শাস্তি—মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯৯৭ সাল থেকে কার্যত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করায় এই দণ্ড কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
সূত্র : এএফপি